নাম পেল ফাতেমা। নতুন ঠিকানা হলো সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত রাজধানীর আজিমপুরের ছোটমণি নিবাস। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন ছোট্ট ফাতেমাকে। ১৬ জুলাই ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে সড়কেই জন্ম হয় ফাতেমার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজউদ্দীন ফরাজি, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ, ফাতেমার দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ পরিবারের সদস্যরা।
মমেক হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, শিশুটির জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট ও রক্তস্বল্পতাসহ যে সমস্যাগুলো ছিল, তার সবই দূর হয়েছে। সুস্থ অবস্থায় অন্য মায়ের দুধও পান করতে পারছে। হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলা ১১টার পর তাকে এনআইসিইউ থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ জানান, জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবং পরিবারের সম্মতি নিয়ে ফাতেমাকে সমাজসেবা পরিচালিত ঢাকার আজিমপুরের ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে পরম যত্নে লালন-পালন করা হবে। শিশুটি ছোটমণি শিশু নিবাসে ছয় বছর পর্যন্ত থাকতে পারবে। তবে এর আগেই যদি দাদা-দাদি লালন-পালনে সক্ষম হলে তাদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।
ফাতেমাকে বিদায় বেলায় আপ্লুত হয়ে পড়েন দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু। তিনি বলেন, ফাতেমার ভালোর জন্য প্রশাসন সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। কিন্তু তাকে বিদায় দিতে কষ্ট হচ্ছে, এই ফাতেমা হচ্ছে আমার ছেলে ও পুত্রবধূর স্মৃতিচিহ্ন। সে যেন মানুষের মতো মানুষ হয়, এটাই আমার প্রত্যাশা। এর আগে ১৬ জুলাই বিকেলে ত্রিশালের কোর্ট ভবন এলাকায় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান উপজেলার রায়মণি এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। এ সময় রত্না বেগমের গর্ভ ফেটে জন্ম নিয়ে বেঁচে যায় ওই নবজাতক।
এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ভর্তি করা হয় নগরীর বেসরকারি লাবীব হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জন্ডিসসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ১৮ জুলাই রাত থেকে শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়।